আগরতলার পুরভোট নিয়ে থামছেনা রাজনৈতিক তরজা। বাবুল সুপ্রিয়র পর এবার ফিরহাদ হাকিমের ।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউই।
আজ শনিবার ফিরহাদ হাকিমের ত্রিপুরা সফরকে ঘিরে ফের একবার মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ।
তার বক্তব্য, “ভালো একটা সুযোগ হয়েছে ঘোরাঘুরি করার। এখানে খুব প্রেসারে থাকেন।
সারা বছর জল জমে থাকে সেই নিয়ে টেনশন। তারপর এই যে এত স্ক্যাম হচ্ছে, চাকরি দেওয়া নিয়ে রোজ আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।
কদিন একটু রিল্যাক্স থাকবেন ত্রিপুরায়।”
পাশাপাশি, ফিরহাদ হাকিমকে গোয়া ঘুরে আসার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, “একটু গোয়াও ঘুরে আসুন। ওখানকার লোক ভালো স্বাগত করছেন। সুন্দর পরিবেশ ওখানে।
এখানকার মত মারকাট হিংসা নেই।” একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, নিশ্চিন্তে থাকুন, বললে হোটেল বুক করে দেওয়া হবে।”
২৫শে নভেম্বর আগরতলায় পুরভোট। আর সেই ভোটের আগে ত্রিপুরায় নিজেদের জমি শক্ত করতে কোমর বেঁধে তোড়জোড় শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
২৫শে নভেম্বর ত্রিপুরায় ১৩টি পুরসভা ও ৬টি নগর পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তার আগে বাংলা থেকে তারকা সহ ৯ জন নেতাকে পাঠানো হয়েছে ত্রিপুরায়।
গত কয়েকদিন যাবৎ জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল একাধিক নেতার পাশাপাশি ত্রিপুরায় রয়েছেন বিধায়করাও।
ত্রিপুরা নির্বাচনকে ঘিরে বারবার সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠায় ত্রিপুরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা।
সেই অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়ও।
তাঁদের দাবি, ভিভিপ্যাট এবং সিসিটিভিতে যথাযথভাবে নজরদারি চালাতে হবে, অন্যথায় নির্বাচনের ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ ওঠার সম্ভাবনা প্রবল।
পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য, ত্রিপুরায় যেভাবে লাগাতার সন্ত্রাস চলছে এবং তাদের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
সেইসঙ্গে, ত্রিপুরায় বিরোধী প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতেও সরব হয় তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রচারকার্য চালানোর সময় হামলা করা হয় রাজ্যের প্রথম সারির নেতা আশিসলাল সিংয়ের উপর।
তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও ওঠে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ঘটনা প্রসঙ্গে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “এখানে যেভাবে গুন্ডামি হচ্ছে, সিসিটিভি না রাখা, ভিভিপ্যাট না রাখা।
এগুলো ভোট বিধির উপেক্ষা ছাড়া কিছুই নয়। এগুলো চলতে পারে না। বাইক নিয়ে গুন্ডারা ছেলেদের ভয় দেখাচ্ছে, প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছে।
পুলিশ ও সরকারের মধ্যে যে সমীকরণ, এটা খুব খারাপ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
এদিকে, শনিবার সকালে ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণের সময় রাজারহাট নিউটাউন তৃণমূল যুব সভাপতি মহম্মদ আফতাব উদ্দিন ও দিলীপ ঘোষ একে অপরকে কুশল বিনিময় করেন।
ঠিক তারপরেই আফতাব উদ্দিন হাত তুলে দিলীপ ঘোষকে বলেন, “খেলা হবে, ত্রিপুরাতে খেলা হবে।” প্রত্যুত্তরে দিলীপ বাবু বলেন, “ত্রিপুরা কাপ হবে।”
পরে সেই প্রসঙ্গে দিলীপ বাবু জানিয়েছেন, “আমরা এখানে মর্নিং ওয়াক করতে আসি। বাকি সবাই আসেন।
কিন্তু যাদের মাথায় রাজনীতি আছে, তারা রাজনীতি করেন। আর খেলা তো
ত্রিপুরাতে হচ্ছেই। বাবুল সুপ্রিয় গিয়েছেন। তাঁর গান বাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানো হচ্ছে, ‘এই তৃণমূল আর নয়’! এর চেয়ে ভালো খেলা আর কি হবে? ”
অন্যদিকে রাজারহাট নিউটাউন তৃণমূল যুব সভাপতি মহম্মদ আফতাব উদ্দিন বলেন, “আমরা দিলীপ ঘোষকে সুপ্রভাত জানালাম।
এটা সৌজন্য। একইসঙ্গে বললাম, দিলীপদা খেলা হবে। বাংলায় খেলা হয়েছে। বিজেপি কুপোকাত।
এরপর বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে খেলা হবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। ত্রিপুরাতে বিজেপি সন্ত্রাস করছে। সিপিএম যে ভুল করেছিল, বিজেপিও সেই ভুল করছে।
গোয়া, মেঘালয়, অসমেও বিজেপি হারবে এটাই দিলীপদাকে একটু মনে করিয়ে দিলাম। দিলীপদা পাল্টা বললেন, ত্রিপুরাতে খেলা হবে।
দেখা যাক! বাংলায় সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করেছিলেন উনি, কিছুই করতে পারেননি। যে কোন রাজ্যে করুন কিছু লাভ হবে না।”
ত্রিপুরায় জয় নিয়ে তৃণমূলের এই আত্মবিশ্বাসকে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “স্বপ্ন দেখুক।
তাতে তো পয়সা খরচ হয়না। প্রার্থী দিতে পারছে না। তারপরেও জয়ের স্বপ্ন দেখছে। টিএমসি ওখানে কুপোকাত হবে।”
Also read – বিজেপি নেতার তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনা চলছে