শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলে উত্তপ্ত কসবাঃ “আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ”, দাবি কাউন্সিলরের

প্রকাশিত হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল। বাংলায় ২৯টি আসন দখল করে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে শাসক দল। কিন্তু তারপরেও অব্যাহত তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ফের রবিবার রাতে ইন্দুপার্কে চলল গুলি ও বোমাবাজি। শনিবার রাতে কসবায় বহিরাগত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। রবিবার দুপুরে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এলাকার বর্তমান কাউন্সিলর লিপিকা মান্নার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান প্রাক্তন কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ এবং তাঁর অনুগামীরা। সেই কারণেই ফের রবিবার রাতে হামলা চালানো হয় এলাকায়। এমনটাই দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

কসবায় লোকসভা ভোটে খারাপ ফল হয়েছে তৃণমূলের। অভিযোগ, কেন কম ভোট পেয়েছে তারা, এই প্রশ্ন তুলে শনিবার রাত্রিবেলা রাজডাঙা ইন্দুপার্ক ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে দফায়-দফায় হামলা চালাচ্ছে লিপিকা মান্নার দলবল। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, রাত্রিবেলা তাদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করা হচ্ছে। ভোটে খারাপ ফলের দায় তারা প্রাক্তন কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের উপর চাপাচ্ছে, এমনটাই তথ্য উঠে এসেছে।

তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, শনিবার রাতে তাঁদের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করেন ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর লিপিকা মান্নার দলবল। কাঞ্চন বৈদ্য নামে আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ,  শনিবার রাত এগারোটা-সাড়ে এগোরাটার মধ্যে তাঁরা শুনতে পেয়েছিলেন, নেশা করে অনেকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করছে। কাঞ্চনরা বিষয়টি দেখতে গেলে তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে দাবি। এমনকি, তাঁর মাকেও মারা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রেখা হালদার নামে আর এক তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, “ফল ঘোষণার পরেই লিপিকা মান্নার ছেলেরা আসে আমাদের আওয়াজ দিতে থাকে, ছবি তুলে রাখ সকলের। নতুন ঘর তুলেছে তো? সব ভেঙে দেব। দেখে নেব।”

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাত্রিবেলা আলো নিভিয়ে বোমাবাজি করা হচ্ছে। গুলির শেলও পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “লিপিকা মান্নার ছেলেরা আমাদের মহিলাদের উপর অত্যাচার করছে। নাইটি ধরে টানছে। পাশের আর এক মহিলাকে মেরেছে।” লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে কসবা থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ।

সুশান্ত কুমার ঘোষ বলেন, “নির্বাচনের রেজাল্ট বেরনোর পর থেকে এই আক্রমণ চলছে। যারা এত বছর ধরে তৃণমূল করছে তাদের উপর বেছে বেছে এই অত্যাচার করা হচ্ছে। সুশান্ত ঘোষের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখা ও সুশান্ত ঘোষকে ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে ঢুকতে দেওয়া যাবে না এটাই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ওদের। জেলা সভাপতি দেবাশীষ কুমারকে ঘটনা জানিয়েছি। কিন্তু অজানা কারণ এদেরকে পুলিশ কিছু বলে না। গতকাল থানায় কেন অভিযোগ জানানো হয়েছে এই কারণে দুষ্কৃতী বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে। দলীয় নেতৃত্ব ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমার অনুরোধ, আপনি নিজে ব্যাপারটা দেখুন, নাহলে বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে।”

ঘটনায় কাউন্সিলরের প্রতিক্রিয়া, “আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ। যে দল করি, সেখানে আমার বলে কোনও ভাবনাচিন্তা করা যায় না। যাঁদের দল করছি, তাঁদের আশীর্বাদে এই ওয়ার্ডের মানুষ ভাল রয়েছেন। আর যদি কেউ এরকম করেছেন বলে আমি জানতে পারি, অবশ্য়ই পদক্ষেপ করব।”

আরও পড়ুনঃ https://thelocaljournalist.com/%e0%a6%95%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%a8%e0%a6%be-