“ভুল চিকিৎসার জন্যই মৃত্যু ছেলের”..অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে বাবা মায়ের বিক্ষোভ মেডিক্যালে।

 

ক্যানসার আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসা চলছিলো , ডাক্তাররা আশ্বাস ও দিয়েছিলেন যে সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু আস্থা দিলেও দেয়নি চিকিৎসা সম্পর্কে কোনো তথ্য। কিভাবে চিকিৎসা চলছে তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রাখা হয়েছিল পরিবারকে, বলেই উঠে আসছে অভিযোগ। পরিবারকে অন্ধকারে রেখেই বেশি ডোজের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিলো রোগীকে। তারপর বাড়ি নিয়ে আসার পরই কিছুদিনের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ছেলে। দিনকয়েক আগেই হাসাটালের উপধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের বাবা মা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা জানতেই গতকাল বুধবার হাসপাতালে যান ওই দম্পতি। তারপরেই ওই অভিযুক্ত ডাক্তারকে দেখতে পেয়ে তার ওপরেই চড়াও হন ওই দম্পতি। ওই ঘটনা দেখে এগিয়ে আসেন নিরাপত্তারক্ষী। কিন্তু তারা দম্পতি আরো চটে গিয়ে চরাও হয় উপধ্যায়ের ঘরে। মাটিতে বসে কাঁদতে কাঁদতে ক্ষোভ দেখান তারা। স্বাভাবিকভাবেই পরিস্থিতি সামাল দিতে আসেন পুলিশ। তাদের সাথেও বচসা বাধে ওই দম্পতির।

শিবরাম থানা এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস পাল এবং সোমা পালের একমাত্র ছেলে দীপঙ্কর। বছর খানেক আগেই তার ধরা পড়ে রক্তের ক্যানসার। চিকিৎসা চলছিল বেশ অনেকদিন ধরেই। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ইংরেজি অনার্সের ছাত্র ছিলেন দীপঙ্কর। দেবাশিস বলেন মেডিক্যালে ছেলের চিকিৎসা চলছিল চিকিৎসক স্বর্ণবিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে।

অভিযোগ ডাক্তার সবসময়ই আস্থা দিতেন ‘ঠিক হয়ে যাবে” বলে। কিন্তু কোনোদিনও বলেননি চিকিৎসার বিস্তারিত তথ্য। ১৮ই নভেম্বর ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ওই ডাক্তারেরই অধীনে। ওইসময় বার বার ওই দম্পতি চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে চান, কিন্তু দেখা পাওয়া যায়নি বলেই অভিযোগ । ডাক্তার শুধু বলেন “ছেলে সেরে উঠবে”।।। তারপরেই অভিযোগ তাদের না জানিয়েই দীপঙ্করের কোমরে দেওয়া হয় হাই ডোজের ওষুধ এবং তারপরেই বাড়ি নিয়ে আসার পর থেকেই বিছানা থেকে ওঠার ক্ষমতা ছিলোনা ছেলের। এবং তারপর কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় দীপঙ্করের হৃদরোগে। তারপর থেকেই ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়ে জায়গায় জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন ওই দম্পতি। কিন্তু সুরাহা মেলেনি কোথাওই। শেষে কিছু না করতে পেরে বুধবার হাসাতালে যান ওই দম্পতি এবং চড়াও হন উপাধ্যায় এবং ডাক্তারের ওপর।

এই পুরো ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক স্বর্ণবিন্দু বলেন “আমি কেন কোনো চিকিৎসকই চাইবেননা রোগীর মৃত্যু হোক। সন্তানশোকে ওরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে ওদের জন্য সমবেদনা”। এদিন মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রলীন বলেন,”ওই রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়েছিল পরিবারকে, পরে ওই রোগীর মৃত্যু হয়, রোগীর বাবা মায়ের অভিযোগ দেখা হবে খতিয়ে।”