জীবন যুদ্ধের কঠিন একশোদিন পার গাজা স্ট্রিপে.. ..

  • ১) ওপরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ফেস পেন্টিং-এর মাধ্যমে ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ২)নীচের বামদিকে লন্ডনে ফিলিস্তিনের মুক্তির দাবীতে লন্ডনের রাস্তায় জনতা মিছিল। ৩)নীচের ডানদিকে ধ্বংসস্তূপে রূপান্তরিত প্যালেস্টাইন।

 

৭ই অক্টোবর ২০২৩, ইসরায়েল-এর রিপোর্ট অনুযায়ী প্যালেস্টাইনি সংগঠন “হামাস” এক জোরালো হামলা করে রাতের অন্ধকারে ইসরায়েলের ওপর। এই অপারেশনের নাম হামাস দেয় “আল আকসা ফ্লাড”। তারপর থেকেই শুরু হয় জীবনক্ষয়ী প্যালেস্টাইন ইসরায়েল সংঘর্ষ। সেই সংঘর্ষের একশো দিন পার। ২৩,৮৪৩ জন এখনো পর্যন্ত নিহত, ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে আছে শয়ে শয়ে নিথর দেহ যাদের এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ঘরছাড়া কমপক্ষে দু-লক্ষেরও বেশি। প্রাণ হাতে নিয়ে যেসব প্যালেস্টানিয়নরা রাত কাটাচ্ছেন ক্যাম্পে তারা জানেননা পরের দিনের ভোরের আলো আদেও তারা দেখতে পারবেন নাকি! আদেও কি ঘুম ভাঙবে !
প্যালেস্টাইনের সমর্থক হুথি জঙ্গিরা লোহিত সাগর দিয়ে চলা বিভিন্ন ব্যাবসায়িক জাহাজগুলোর ওপর হামলা চালাচ্ছিল। গতকাল থেকে আমেরিকা এবং ব্রিটেন এই হুথি জঙ্গিদের ওপর পাল্টা চালাচ্ছে হামলা অসাংবিধানিকভাবে।

গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ব্যাপক গোলাবর্ষণ চলেছে দক্ষিণ গাজা স্ট্রিপে। ইজরায়েলের নির্দেশে বলা হয়েছিল প্রাণ বাঁচাতে যেন উত্তরের বাসিন্দা দক্ষিণে চলে যায় কিন্তু তারপর থেকেই আবার দক্ষিণ গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। গত দুই রাতে ৫৯জনের মৃত্যু এবং অসংখ্য মানুষ জখম হয়েছে। ইসরায়েলের দাবি খান ইউনিসে ৭ এবং গাজার মাঘাঙ্গী এলাকায় তারা ২০ জন জঙ্গিকে নিহত করেছে। যদিও সংবাদমাধ্যম গুলির ক্যামেরায় খান-ইউনিসে শুধু কালো ধোঁয়ার কুণ্ডুলি ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি।ইন্টারনেট থেকে শুরু করে যোগাযোগ সবটাই বিচ্ছিন্ন প্যালেস্টাইনে। যারা স্বপ্ন দেখেছিল বেঁচে থাকার তারাও মারা গেল রাতের অন্ধকারে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুকে আকড়েই।

এই একশো দিনের কঠিন দিনগুলোতে প্যালেস্টাইনিয়ানরা বহুকিছু দেখেছেন। দেখেছেন ঋতুস্রাব বন্ধ করতে কিভাবে মেয়েরা খেয়েছেন ওষুধ, কিভাবে অনেস্থেসিয়া ছাড়া চলেছে চিকিৎসা, কিভাবে যত্র-তত্ৰ ছিটিয়ে ছিটিয়ে পড়েআছে নিহত ক্ষত বিক্ষত শিশুদের শব। যীশুর জনদিনে যীশুর জন্মস্থান ছিলো আধারে, শিশুদের কান্না আর প্রাণ বাঁচানো আর্তনাদ ছাড়া আর কিছুই শোনা যায়নি। তবুও বারবার এই মৃত মহাদেশে ফিরে ফিরে এসেছে রোদ্দুর। এই শ্মশানেই হয়েছে নতুন প্রানের সঞ্চার।

এমতবস্থায়ও ইসরায়েল তাদের লক্ষে অবিচল। তারা হামাসকে শেষ করা অবধি থামবেনা।তাদের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলাও চলছে । এই প্রসঙ্গ টেনেই তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিচেপ তাই এডওয়ার্ড বলছেন,”আমাদের বিশ্বাস এই গণহত্যার দোষী ইসরায়েলকেই করা হবে”। তুরস্কের প্রধান মন্ত্রীর মতোই অনেকেই ভরসা রাখতে চাইছে আন্তর্জাতিক আদালতের ওপরে।
সংবাদ সংস্থা…­